নিজস্ব প্রতিবেদকঃ ফরিদপুর পাসপোর্ট অফিসের ৫ দালাল আটক হলেও এদের আশ্রয় প্রশ্রয়দাতারা এখনও বহাল তবিয়তে।
পাসপোর্ট অফিসের ৫ দালাল গত শুক্রবার (৬ জানুয়ারী) ২০২২ইং আড়াই লাখ টাকাসহ ডিবি পুলিশের হাতে আটক হয়। এবং পাসপোর্টের কাজে ব্যবহার করা হয় এমন বহু কাগজপাতি উদ্বার করা হয়। এই খবরটি দেশের অধিকাংশ শীর্ষ সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ হয়। এর আগেও ফরিদপুর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বহু দালাল আটক করে চালান দিলেও কমেনি দালালি প্রথা।
উপরন্ত ফরিদপুর আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসগুলোতে দালালদের দৌরাত্ম্য বাড়ছে কমছে না কোনোভাবেই। বিভিন্ন সময়ে পুলিশের অভিযানে দালালরা ধরা পড়লেও জামিনে বের হয়ে একই কাজ করছে। দালাল ছাড়া পাসপোর্টের আবেদন করলে আবেদনকারীকে নানা বাহানার সম্মুখীন হতে হয়। পাসপোর্ট অফিসের অনেক কর্মকর্তা ও কর্মচারী সার্ভার নষ্ট, ছবিতে সমস্যা, জন্ম তারিখে ভুলসহ নানা কারণ দেখিয়ে টালবাহানা করতে থাকেন। এভাবে মাসের পর মাস আটকে রাখা হয় পাসপোর্ট ডেলিভারি। আর দালালদের হাত ধরে পাসপোর্ট আবেদন করলে অফিস থেকে এ ধরনের কোনো বাহানা শুনতে হয় না। দালালের মাধ্যমে অতিরিক্ত টাকা দিয়ে ঠিকই সঠিক সময়ে পাসপোর্ট হাতে পাওয়া যায়। তাই পাসপোর্ট অফিসের কর্মকর্তা ও দালালদের মধ্যে যোগসাজশের প্রশ্ন ওঠে। এ ধরনের পরিস্থিতি এড়াতে স্থায়ীভাবে পাসপোর্ট অফিসগুলো দালালমুক্ত করতে ব্যবস্থা গ্রহণের ভুক্তভোগীদের জোর দাবি উঠছে। ফরিদপুর আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে এক শতাধিক দালালের দৌরাত্বে পাসপোর্ট প্রত্যাশীরা নানাভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছেন। নতুন পাসপোর্টের জন্য আবেদন কিংবা পুরাতন পাসপোর্ট নবায়নের ক্ষেত্রে সেবা প্রত্যাশীদের পদে পদে হয়রানির শিকার হতে হয়।
তবে পাসপোর্ট অফিসের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেছেন, দালালদের সঙ্গে পাসপোর্ট অফিসের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। সেবা প্রত্যাশীরা সরাসরি অফিসে এসে সেবা নিলে কোনো দুর্ভোগ পোহাতে হয় না।
সেবা প্রত্যাশীদের অভিযোগ, দালালদের মাধ্যমে ফরম জমা দিলে সেই ফরম সহজে জমা দেওয়া যায়, দালালদের আশ্রয় না নিলে পাসপোর্ট অফিসের কর্মকর্তারা হয়রানি করেন।
এদিকে, পাসপোর্ট অফিসে দালালদের দৌরাত্মের কথা স্বীকার করে পুলিশ জানায়, পাসপোর্ট অফিসে এক শতাধিক দালালকে চিহ্নিত করা হয়েছে।
গত শুক্রবার (৬ জানুয়ারি) সেবা প্রত্যাশীকে হয়রানির সময় হাতেনাতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৫ জন দালালকে। অভিযোগ আছে, একটি এম আর পি (MRP) অর্থ্যাৎ মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট। মানে হলো, ভোটার আইডি এবং বহু তথ্য উপাও বাদ দিয়ে একটি পাসপোর্ট করতে অফিস খরচ হিসেবে গ্রাহক গুনতে হয় নগদ ২০ (বিশ হাজার) টাকা প্রতিদিন এরকম ১৫/২০ অবৈধ পাসপোর্টের ফরম জমা পড়ে। এই হিসেবে দৈনিক ৩ লাখ টাকা। এবং দৈনিক ২০০ থেকে ৩ শাতাধিক ই-পাসপোর্ট জমা পড়লে দালালদের অফিস খরচ হিসেবে প্রত্যেকের প্রতি পাসপোর্টে নগদ গুনতে হয় ১৫ শত টাকা। তাতে দালালদের ও ভুক্তভোগীদের তথ্য মতে বলা যায়, এতেও দৈনিক (৩ লাখ টাকা আয় হয়)। তাতে ৩০ দিনে এক কোটি ৮০ লাখ টাকা হয়। এছাড়াও রয়েছে পাসপোর্ট গ্রাহকদের আগে পাসপোর্ট হাতে পাওয়ার সম্মানী।
উল্লেখিত বিষয়, ফরিদপুর পাসপোর্ট অফিসের সহকারী পরিচালক শামীম আহম্মেদের সাথে কথা হলে, তিনি গনমাধ্যম কে বলেন। আমার এ অফিসে এমআরপি পাসপোর্ট হয় না। এবং প্রতিদিন এক থেকে দেড়শত ফাইল জমা পড়ে। কেউ কোন হয়রানির শিকার হন না। দালালদের সাথে তার কোন পরিচয় নাই। তিনি সকল অভিযোগ মিথ্যা ভিওিহীন ও মননগড়া অসত্য তথ্য বলে দাবি করেন।