এ সম্মেলনকে ঘিরে ফরিদপুর শহরে অবস্থিত সরকারী রাজেন্দ্র কলেজের শহর ক্যাম্পাস সংলগ্ন মাঠে তৈরী করা হয়েছে বিশাল প্যান্ডেল ও নৌকা মঞ্চ। সম্মেলনের সব প্রস্তুতি শেষ।
এখন শুধু হাট বাজার চায়ের দোকানের আড্ডা কিংবা চলতি পথের আলাপ আলোচনায় উঠে আসছে জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন প্রসঙ্গ, সকলের মুখে মুখে একই প্রশ্ন, সকাল হতেই সম্মেলনকে সামনে রেখে কে হবেন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, এই নিয়ে চলছে নানা গুঞ্জন। নেতাকর্মীরাও উজ্জীবিত হয়ে উঠছেন যার যার পছন্দের নেতার সমর্থনে নানামুখী তৎপরতা।
এদিকে সম্মেলনকে ঘিরে শহরের রাজবাড়ী রাস্তার মোড় থেকে ভাঙ্গা রাস্তার মোড় হয়ে আলীপুর ব্রিজ পার হয়ে রাজেন্দ্র কলেজ মাঠ পর্যন্ত শোভা পাচ্ছে ব্যানার, ফেস্টুন, বিলবোর্ড সহ মহাসড়কে তৈরি করা হয়েছে প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ টি তোরণ। এ ধরনের বর্ণিল সাজে সর্ব প্রথম সাজছে ফরিদপুর রাজেন্দ্র কলেজের মাঠ।
জানা যায়, জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফরউল্লাহ।
সম্মেলন উদ্বোধন করবেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি।
সম্মেলনে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম এমপি।
সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের কৃষি মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী ডঃ আব্দুর রাজ্জাক এমপি, প্রেসিডিয়াম সদস্য লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) ফারুক খান এমপি, প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুর রহমান, কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের মাননীয় মন্ত্রী ডা. দীপুমনি এমপি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ. ফ. ম. বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বি. এম. মোজাম্মেল, সাংগঠনিক সম্পাদক এস.এম. কামাল, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ডক্টর আবদুস সোবহান গোলাপ এমপি, শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক মোঃ সিদ্দিকুর রহমান, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, কার্যনির্বাহী সদস্য আনোয়ার হোসেন, কার্যনির্বাহী সদস্য শাহাবুদ্দিন ফরাজী, কার্যনির্বাহী সদস্য ইকবাল হোসেন অপু এমপি, সৈয়দ আব্দুল আওয়াল শামীম, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম এমপি।
ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এ্যাডভোকেট সুবল চন্দ্র সাহা সভাপতিত্বে, এবং জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ মাসুদ এর সঞ্চালনায় সম্মেলন অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেবেন জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ।
জানা গেছে, ২০১৬ সালে সর্বশেষ ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
সেই সময় থেকে সুবল চন্দ্র সাহা সভাপতি ও সৈয়দ মাসুদ সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। এবার কে হচ্ছেন সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক তা নিয়ে চলছে জল্পনা ও কল্পনা। কাউন্সিলের মাধ্যমে নেতা নির্বাচিত হবে না কেন্দ্র নির্ধারণ করবে তা নিয়ে চলছে বিতর্ক। তবে দলের নেতাকর্মীরা বলছেন, দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, সভাপতি পদে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তাদের মধ্যে রয়েছেন, আওয়ামী লীগের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বিপুল ঘোষ, জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট সুবল চন্দ্র সাহা, সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ মাসুদ হোসেন, সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট শামসুল হক ভোলা মাস্টার, আরেক সহ-সভাপতি শামীম হক, যুবলীগের সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য ফারুক হোসেন, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপকমিটির সাবেক সদস্য সাইফুল আহাদ সেলিম ও বোয়ালমারী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম.এম মোশাররফ হোসেন মুশা মিয়ার নাম শোনা যাচ্ছে।
অপরদিকে সাধারণ সম্পাদক পদে সাধারণ সম্পাদক পদে শোনা যাচ্ছে বর্তমান জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ঝর্ণা হাসান, ফরিদপুর পৌর মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক অমিতাভ বোস, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির অর্থ ও পরিকল্পনা উপ-পরিষদের সদস্য কামরুজ্জামান কাফি, আওয়ামী লীগ নেতা মোঃ লিয়াকত হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক এ্যাড অনিমেষ রায়, জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক জিয়াউল হাসান মিঠু এবং জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি শওকত আলী জাহিদের নাম শোনা যাচ্ছে।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ্যাডভোকেট সুবল চন্দ্র সাহা বলেন, সম্মেলনের সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। সম্মেলনের মাঠে ১২ হাজার নেতা কর্মীর চেয়ারে বসার ব্যবস্থা করা হয়েছে, তবে জনসমাগম ১৮ থেকে ২০ হাজার হতে পারে। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে সম্মেলন শেষ করতে চাই। দলের প্রতি যারা দীর্ঘদিন ধরে আনুগত্য দেখিয়েছেন তাদেরকে দিয়েই আগামীদিনের কমিটি হবে এমনটিই প্রত্যাশা করি। আগামী দিনের নেতৃত্বে যারাই আসুক, আমরা প্রত্যাশা করি তারা চাঁদাবাজ হবেন না, ক্ষমতার অপব্যবহার করবেন না। আমরা স্বচ্ছ একটি জেলা কমিটি চাই। যে কমিটিতে কোন বিতর্কিত ব্যক্তি, কোন হাইব্রিড বা অনুপ্রবেশকারীর স্থান মেনে নেব না।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ মাসুদ হোসেন জানান, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেটা ভালো মনে করবে সেই সিদ্ধান্ত আমরা মেনে নেব। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সম্মেলন সফল করতে কাজ করছেন। নৌকার পক্ষে ছিলাম, আছি এবং মৃত্যু পর্যন্ত থাকব।