নিরঞ্জন মিত্র নিরুঃ দুষ্টের দমন ও শিষ্টের পালন এই বিশ্বাসের প্রতিক দেবী দুর্গার শুভ আগমনে, অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে শুভ কল্যাণ এবং মত্যলোকে শান্তি ও সম্প্রীতির আকাঙ্খা নিয়ে সারা দেশে একযোগে পালিত হচ্ছে হিন্দু সনাতন ধর্মালম্বীদের সবচেয়ে সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দূর্গাপূজা।
গত (১ অক্টোবর) শনিবার মহা ষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে দেশে শুরু হয়েছে এই পূজা। এরই অংশ হিসেবে ফরিদপুর জেলার মধ্যে আকর্ষণ হিসাবে দৃষ্টি কেড়েছে সদরের একটি গ্রামের পল্লী এলাকা ধোপাডাঙ্গা চাঁদপুর বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি সি.আই.পি ড. যশোদা জীবন দেবনাথের বাড়ীতে বৃহৎ পরিসরে ৩ শত ১ টি প্রতিমা নিয়ে শারদীয় দুর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
সত্য, ত্রেতা, দ্বাপর ও কলি যুগের পৌরাণিক কাহিনী মহা ভারত ও রামায়ণের গল্পকথা ফুটিয়ে তোলা
বিভিন্ন চরিত্রকে দৃশ্যমান করে, নির্মিত হয়েছে প্রতিমাগুলো। ২ শত ১ ভাগে খন্ড করে দর্শকদের সামনে দৃশ্যমান প্রতিমা। এখানে দেবী দুর্গার প্রতিমা সহ স্থান পেয়েছে ৩ শত ১ টি প্রতিমা। মৃৎশিল্পী রাত দিন পরিশ্রম করে তিন মাস ধরে রামায়ণ ও মহাভারতের কাহিনিকে যেন স্বর্গ থেকে মত্যে নামিয়ে এনেছেন।
ব্যতিক্রমী এই পূজার আয়োজন দেখতে পূজার আগে থেকেই দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসছেন দর্শনার্থীরা। পাশাপাশি রয়েছে গেট, প্যান্ডেল নির্মাণ ও আলোকসজ্জা আধুনিকতার ছোয়া। এবং মেইন গেটের সামনেই সি.আই.পি যশোদা জীবন দেবনাথ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে বিশাল মেলার আয়োজন।
দর্শনার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ফরিদপুর জেলায় বিখ্যাত যে কয়েকটি পুজা হচ্ছে, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হিসাবে পরিচিত সিআইপি যশোদা জীবন দেবনাথের বাড়ীর দুর্গোৎসব। বিভিন্ন জেলা থেকে আগত দর্শনার্থীরা অংশগ্রহন করে এই দুর্গোৎসবে।
প্রতিমা শিল্পী গোপালগঞ্জ জেলার পল্টন পাল জানান, রাময়ন ও মহাভারতের মূল কাহিনী ফুটিয়ে তুলতে প্রতিমা তৈরী করতে তিন মাস সময় লেগেছে। আশাকরি প্রতিমা তৈরী ও মন্দিরের সাজসজ্জার কাজ এটি দেশের সেরা পূজার মধ্যে একটি।
মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক পঙ্কজ দেবনাথ জানান, আমার অভিজ্ঞতায় ২০১৫ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত এই মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দ্বায়িত্ব পালন করছি। এবং প্রতি বছরে অষ্টমী ও নবমী পূজায় ৩০ থেকে ৪০ হাজার লোকের সমাগম হয়। আজ সপ্তমী পূজা বৃষ্টি হওয়ায় তুলনামূলক কম দর্শনার্থীরা রয়েছে। আগামী কাল দর্শনার্থী বেশি হবে বলে আশা করছি।
সি.আই.পি ড. যশোদা জীবন দেবনাথ জানান, ফরিদপুর জেলায় ৮ শত ৩৯ টি পূজা মণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এবং আমার নিজ বাড়িতে ২ শত ১ খন্ডে ৩ শত ১ টি প্রতিমা নিয়ে পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আজ মহা সপ্তমীর দিন এবং আমি জেলা সভাপতি হিসেবে ফ জেলার তথা সারা বাংলাদেশের সকলের শারদীয়া শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। সকলের সুখ শান্তি ও সমৃদ্ধি বয়ে আনুক এই কামনা করছি। ধর্ম যার যার উৎসব সবার এই নীতিতে বিশ্বাস করে এখানে অনেক দর্শনার্থীরা আসবে এই প্রত্যাশা করছি।
ফরিদপুর পুলিশ সুপার মোঃ শাহজাহান জানান, মন্দির গুলোতে সার্বিক নিরাপত্তার জন্য সার্বক্ষণিক মন্ডপগুলোতে পুলিশ, আনসার সদস্য ও সেচ্ছাসেবেক বাহিনী নিয়োজিত সহ মোবাইল টিম কাজ করছে। এবং জেলায় শান্তিপূর্ণ ভাবে দুর্গা পূজা উদযাপন সম্পন্ন হবে জানান।