নিজস্ব প্রতিবেদকঃ নানা অব্যবস্থাপনা ও অনিয়মের অভিযোগে ফরিদপুর শহরের পিয়ারলেস হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের দুই পরিচালককে ৭দিন করে কারাদণ্ড প্রদান করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
২৬ জুলাই বুধবার রাতে শহরের ভাঙ্গা রাস্তার মোড়ে অবস্থিত পিয়ারলেস হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালনা করেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইমাম রাজি-টুলু।
এসময় হাসপাতালের অনুমোদন ও ডাক্তার না থাকা এবং পরিবেশ অস্বাস্থ্যকর থাকায় হাসপাতালের পরিচালক মিঠুন চন্দ্র দাস ও আসাদুজ্জামান আসাদকে ৭দিন করে কারাদণ্ড প্রদান করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। অভিযানকালে জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো. ছিদ্দীকুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইমাম রাজি-টুলু জানান, পিয়ারলেস হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানকালে হাসপাতালের নানা অনিয়ম পরিলক্ষিত হয়।
তিনি বলেন, ২০১৯ সালের পর থেকে হাসপাতালের লাইসেন্স অনুমোদন করা হয়নি। এছাড়া ১০ শয্যার অনুমোদন থাকলেও দেখা যায় ২০ শয্যা। ডাক্তার তিন জন থাকার কথা থাকলেও একজনকেও পাওয়া যায়নি। এছাড়া ল্যাবের পরিবেশ ছিল নোংরা। যে সকল নার্স ছিলেন কেউই ডিপ্লোমাধারী নন। নিয়মতান্ত্রিক চালানো হচ্ছিল না হাসপাতালটি। একারণে হাসপাতালের পরিচালক মিঠুন চন্দ্র দাস ও আসাদুজ্জামান আসাদ কে ৭দিন করে কারাদণ্ড প্রদান করা হয়।
সিভিল সার্জন ডা. মো. ছিদ্দীকুর রহমান বলেন, হাসপাতালটির বিরুদ্ধে অভিযোগ পেয়ে এ অভিযান চালানো হয়। তারা ১০ শয্যার অনুমতি নিয়ে আরো বেশি শয্যা বসিয়ে কার্যক্রম চালাচ্ছে। এছাড়া তাদের কোন নিয়োগপ্রাপ্ত চিকিৎসক নেই। অনকল ডাক্তার দিয়ে তারা কাজ চালাচ্ছে। ১২ জন নার্সের স্থলে মাত্র একজন নার্স রয়েছে। প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতিও নেই। তাদের এক মাসের সময় দিয়ে এসব শর্ত পূরণ করতে বলা হয়েছে অন্যথায় হাসপাতালটি বন্ধ করে দেয়া হবে।
এদিকে সম্প্রতি পিয়ারলেস হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অ্যাপেন্ডিসাইটিস অস্ত্রোপচারের সময় হাসনা বেগম (৩৫) নামে এক গৃহবধূর মলদ্বারের নাড়ি কেটে ফেলার অভিযোগ উঠে। অসুস্থ ওই গৃহবধূ বর্তমানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নতুন ভবনের পাঁচতলায় মহিলা ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তার অবস্থা সুবিধাজনক নয়।
জানা যায়, ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা গৃহবধূ হাসনা বেগমকে ভাগিয়ে পিয়ারলেস হাসপাতালে নিয়ে তার অস্ত্রোপচার করা হয়। অস্ত্রোপচারের সময় মলদ্বারের নাড়ি কেটে ফেলা হয় বলে পরিচালকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন ওই গৃহবধূর স্বামী ইটভাটার দিনমজুর মো. আব্দুল মান্নান ব্যাপারী। অস্ত্রোপচারটি করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিশেষজ্ঞ ডা. উৎপল নাগ।
এর আগে ফরিদপুরের আল-মদিনা বেসরকারি হাসপাতালে নবজাতক প্রসবের সময় নবজাতকের কপাল কেটে ফেলেন ওই হাসপাতালের আয়া চায়না। এঘটনায় ওই আয়া, হাসপাতালের পরিচালক ও এক দালালকে আটক করে পুলিশ।
এছাড়া শহরের আরামবাগ হাসপাতালে প্রসবের সময় এক নবজাতকের হাতের হাড় ভেঙ্গে ফেলার ঘটনায় আরামবাগ হাসপাতালের মালিক ও তিন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে ভুক্তভোগী পরিবার।