ফরিদপুর প্রতিনিধি: এস,এস,সি পরীক্ষার্থী সোহেলা রানা আজ রবিবার সকালে ঘুম থেকে ওঠে পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। এমন সময় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে বাড়িতেই মারা যান তার বাবা। হঠাৎ বাবার মৃত্যুতে আকাশ ভেঙ্গে পড়ে তার। অনিশ্চিত হয়ে পড়ে পরীক্ষায় অংশ নেওয়া। এরই মধ্যে স্বজনদের কান্না আর আহজারিতে ভারি হয়ে উঠে চারপাশ। শেষ পর্যন্ত বাবার লাশ বাড়িতে রেখেই অশ্রু জলে বুক ভাসিয়ে তা মুছতে মুছতে প্রবেশপত্র হাতে নিয়ে কেন্দ্রে গিয়ে পরীক্ষা দিয়েছে শেখ সোহেল রানা।
পরীক্ষার্থী সোহেল রানা ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার জুঙ্গুরদী গ্রামের মো. মজিবর শেখের ছেলে। তিনি নগরকান্দা সরকারি মহেন্দ্র নারায়ণ একাডেমি থেকে এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে। রবিবার ছিল কৃষি শিক্ষা পরীক্ষা।
জানা গেছে, রবিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সকালে নিজ বাড়িতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে সোহেল রানার বাবা মজিবর শেখ (৪৫) মারা যান। বাবার মৃত্যুর খবরে সকালেই রানার কয়েকজন সহপাঠী তার বাড়িতে যান। রানার অনিচ্ছা থাকা সত্তে¡ও সহপাঠীরা সান্ত¡না দিয়ে তাকে নগরকান্দার শহিদ মুক্তিযোদ্ধা আক্রামুন্নেসা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় পরীক্ষা পরীক্ষা কেন্দ্রে নিয়ে যায়।
পরীক্ষা কেন্দ্র সচিব মাহবুব আলী মিয়া জানান, যথাসময়ে কেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে রানা পরীক্ষা দিয়েছে। বাবা মারা যাওয়ায় রানা অনেকটা ভেঙ্গে পড়েছিল। পরীক্ষা চলাকালে আমরা সার্বক্ষণিক তার খোঁজখবর নিয়েছিলাম।
নগরকান্দা সরকারি এম এন একাডেমির প্রধান শিক্ষক বেলায়েত হোসেন মিয়া বলেন, সকালেই রানার বাবার মৃত্যুর খবর শুনেছি। এটি খুবই কষ্টদায়ক ঘটনা। আমরা রানার পরিবারের সাথে যোগাযোগ করেছি। রানার মনমানসিকতা ভালো রাখতে ও ভালোভাবে পরিক্ষা সম্পুর্ন করতে আমরা সার্বক্ষণিক তার খোঁজ খবর নিয়েছি।
রানার নিকট আত্মীয় মিজানুর রহমান বলেন, সকালেই রানার সহপাঠীরা বাড়িতে এসে তাকে বিভিন্নভাবে বুঝিয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে নিয়ে যায়। রানার বাবা পেশায় একজন সিএনজি চালক ছিলেন। হটাৎ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে রবিবার ভোরে তিনি মারা যান। দুই ভাইয়ের মধ্যে রানা সবার ছোট। বড় ভাই হৃদয় শেখ বেকার। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম পিতার মৃত্যুতে দিশেহারা তার পরিবার। বিকালে আসর নামাজের পর জুুঙ্গুরদী ঈদগাহ মাঠে জানাজা শেষে স্থানীয় কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন করা হবে।