নুরুল ইসলাম, বিশেষ প্রতিনিধি: ফরিদপুরের সালথায় মায়ের ওপর অভিমান করে বাবার মাফলার গলায় পেচিয়ে শাহেলা আক্তার নামে নয় বছর বয়সী এক শিশু ছাত্রী আত্মহত্যা করেছে।
রবিবার (৩০ অক্টোবর) সন্ধ্যায় উপজেলার আটঘর ইউনিয়নের জয়কাইল গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত শাহেলা জয়কাইল গ্রামের কৃষক মো. বিল্লাল মোল্যার এক মাত্র মেয়ে। সে জয়কাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী। পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠিয়েছে।
নিহত ওই ছাত্রীর পরিবার ও স্থানীয়রা জানান, বরিবার বিকাল ৫ টার দিকে শাহেলাকে তার সেলিনা বেগম ৫ টাকা হাতে দিয়ে দোকান থেকে একটি সুতার কাঠি কিনে আনতে বলে। কিন্তু শাহেলা সুতার বদলে একটি খাবার (বিস্কুট) কিনে আনে। বিষয়টি নিয়ে সেলিনা তার মেয়ে রাগারাগি করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে শাহেলা ঘরের ভিতরে গিয়ে আড়ার সঙ্গে বাবার মাফলার গলায় পেচিয়ে ঝুলে পড়ে। পরে পরিবারের লোকজন তাকে আড়া থেকে নামিয়ে স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে নিয়ে গেলে তিনি মৃত্যু ঘোষনা করেন।
সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ সাদিক বলেন, খবর পেয়ে ওই স্কুল ছাত্রীর লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় থানা একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে।
এদিকে নগরকান্দায় বরিবার সকালে হাফসা আক্তার নামে তৃতীয় শ্রেণির আরেক স্কুল ছাত্রীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। বড় বোনের সঙ্গে ঝগড়া করে হাফসা ঘরের আড়ার সঙ্গে ওড়না পেচিয়ে আত্মহত্যা করে বলে জানা যায। নিহত ছাত্রী উপজেলার কোদালিয়া শহীদনগর ইউনিয়নের কাজলী গ্রামের নুর মোহাম্মাদ মোল্যার মেয়ে। তিনি দেলবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী।
নিহত ছাত্রীর বাবা নুর মোহাম্মাদ মোল্যা বলেন, শনিবার রাত ১১ টার দিকে আমি রাতে বাজার থেকে বাড়ি ফিরে খাবার ঘরের দরজা বন্ধ দেখে মেয়েকে ডকাডাকি করি। কিন্তু ভিতর থেকে কোন সারা শব্দ না আসায় ঘরের দরজা ভেঙ্গে ঘরে প্রবেশ করেই দেখতে পাই মেয়ে আড়ার সাথে ঝুলে আছে।
নগরকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মিরাজ হোসেন বলেন, ময়না তদন্ত শেষে তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী হাফসার লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারনা করা হচ্ছে সে আত্মহত্যা করেছে। তবে এটা হত্যা না আত্মহত্যা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ ঘটনায় থানা একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে।
ফরিদপুর সহকারী পুলিশ (নগরকান্দা সার্কেল) মো. আসাদুজ্জামান শাকিল বলেন, এতো ছোট শিশুদের তো আত্মহত্যার বিষয় ধারনাই থাকার কথা নয়। তারপরেও কিভাবে কি হলো তা নিয়ে তদন্ত চলছে। আমরা তদন্তের স্বার্থে শিশু দুটির লাশটি ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছি।