ফেসবুক স্ট্যাটাসে তিনি লিখেছেন- জাপান সরকারের বৃত্তি নিয়ে মেইজি ইউনিভার্সিটি টোকিওতে দুই বছরের একটি মাস্টার্স কোর্সে পড়ালেখার সুযোগ পেয়েছি। যে কারণে আজ নগরকান্দা সার্কেল অফিসারের পদ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ইস্তফা দিতে হয়েছে। বিগত প্রায় দেড় বছর নগরকান্দা-সালথায় কাজ করতে গিয়ে এখানকার নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গ, জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিক, অন্যান্য অফিসারসহ আরো বহু সুধীজন- শুভানুধ্যায়ীর সাথে একটি হৃদ্যতাপূর্ণ নির্ভরশীলতার সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। অনেক মূল্যবান অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি এখানে। সময়স্বল্পতার কারনে ইচ্ছা থাকলেও অনেক কাজ সম্পন্ন করা যায়নি। যারা পোস্টটি দেখবেন তারা স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং সচেতন নাগরিকদের সাথে নিয়ে এগুলো বাস্তবায়ন করার উদ্যোগ নিন।
প্রথমে সালথায় দাঙ্গা নির্মূল করুন। প্রত্যেক এলাকায় পর্যাপ্ত সিসিটিভি ক্যামেরা বসানোর ব্যবস্থা করুন। অপরাধ শূন্যের কোটায় নেমে আসবে। কোন এলাকায় কয়টি সিসিটিভি দরকার তার একটি তালিকা করেছি আমি। সংশ্লিষ্ট বিট পুলিশিং অফিসারের কাছ থেকে জেনে নিন। প্রত্যেক গ্রামে অন্তত একটি করে আধুনিক লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা করার ব্যবস্থা নিন। বহুগুণে এর সুফল পাবেন। এলাকার কোনো ছাত্র-ছাত্রী যেন স্কুল-কলেজ থেকে ঝড়ে না যায় সেদিকে নজর রাখুন। সারা বছর এলাকাভিত্তিক বিভিন্ন ধরনের খেলাধুলার টুর্ণামেন্ট চালু করুন এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বাড়ান। আজ থেকে ১০-১৫ বছর পরে এলাকাকে কেমন দেখতে চান সেই অনুযায়ী ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কথা ভেবে কাজ করুন। সদগুণ চর্চা করুন এবং ছড়িয়ে দিন।এখানে আমার প্রাপ্তি অনেক। নগরকান্দা-সালথার মানুষের আতিথেয়তা চিরকাল কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ রাখবো আমি। শত কর্মব্যস্ততার মধ্যেও এখানকার নির্মল সবুজ বিস্তৃত ফসলের মাঠ, নীলাকাশে ভেসে বেড়ানো আশ্চর্য সব মেঘদল আর জানালার কার্নিশে পাখিদের নিরবচ্ছিন্ন গান আমাকে আনন্দ দিয়েছে অনেক। সকলের জন্য শুভকামনা রইলো। পরিবার নিয়ে ভালো থাকুন।
উল্লেখ্য- সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (নগরকান্দা-সালথা সার্কেল) পদে যোগদানের পর ফরিদপুর পুলিশ সুপার মো. আলিমুজ্জামানের দিক নির্দেশনায় সালথায় সহিংসতা বন্ধে নানা উদ্যোগ নেন তিনি। সালথাবাসীর কাছে তিনি একজন সৎ নির্ভিক পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করে নিয়েছিলেন। যেকারণে তার চলে যাওয়া খবরে এখানকার অনেক মানুষ দু:খ প্রকাশ করেছেন। তারা বলেছেন- সালথার সহিংতার বিরুদ্ধে এই মানুষটি লড়াই করে যাচ্ছিলেন। পুলিশ সুপার ও তার নানা উদ্যোগের কারণে সংঘর্ষ অনেকটা কমে গেয়েছিল। এখন সে চলে গেলে আবারও মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে পারে দাঙ্গাবাজরা।