ফরিদপুর প্রতিনিধি: ফরিদপুরে ঘনিষ্ঠ বন্ধুর ১ লাখ ৮৬ হাজার টাকা ধার নিয়ে পরিশোধ না করায় বন্ধুকে হত্যা মামলার আসামি গ্রেফতার হয়েছে। ২৯ জুন সকাল সাড়ে এগারোটায় পুলিশ সুপারের কার্যালয় এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানানো হয়। এ সময় সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) (পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) জামাল পাশা এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুমন রঞ্জন সরকার।
প্রেস ব্রিফিংয়ে কৃষ্ণনগর ইউনিয়ন রহিমপুর সাকিন এর চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার আসামি শরিফ বাঁকাউল গ্রেপ্তার এবং হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ধারালো দা ও অন্যান্য জিনিসপত্র উদ্ধার সংক্রান্ত এই প্রেস ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হয়।
প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, পুলিশ সুপার ফরিদপুরসহ উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের দিক নির্দেশনায় কোতোয়ালি থানায় কর্মরত এসআই সেলিম মোল্লার সঙ্গীয় অফিসারসহ গত ২৮ মার্চ ২২ তারিখ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করে সঙ্গীয় ফোর্স এর সহযোগিতায় কোতোয়ালি থানাধীন রহিমপুর মধ্যপাড়া হতে আসামি শরিফ বাকাউল (২৬) পিতা মোয়াজ্জেম বাকাউল ওরফে মারজেম বাকাউল সাং-রহিমপুর, থানা-কোতোয়ালী, জেলা ফরিদপুরকে গ্রেফতার করে।
আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায়, ডিস্ট্রিক্ট শরিফ শেখ তার বয়সে অনেক বড় হলেও বন্ধুর মত চলাফেরা করত। উক্ত শরিফ শেখ এর সাথে গ্রেফতারকৃত আসামি শরীফ বাঁকাউলের গভীর বন্ধুত্ব ছিল। শরিফ শেখ একজন কাঁচামালের ব্যবসায়ী ছিলেন এবং কুরবানী ঈদের আগে গরু কিনে কুমিল্লা চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করতেন তাদের সম্পর্ক অত্যন্ত গভীর ছিল তারা দিনের বেশিরভাগ সময় একসাথে কাটাতো এবং উভয়েরই তাস খেলার অভ্যাস ছিল।
আসামি শরিফ বাকাউল মৃত শরীফের নিকট হতে বিভিন্ন সময়ে ১ লক্ষ ৮৬ হাজার ৫০০ টাকা ধার নেয় ঘটনার আকস্মিকতায় টাকা পরিশোধ না করায় উভয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয় আসামি শরীফ বাকাউল মনে মনে শরীফকে খুন করার পরিকল্পনা করে এবং তার উপর মিথ্যা অভিনয় করে সম্পর্ক বজায় রেখে আগের মত মৃত শরীফের সাথে তাস খেলা ঘোরাফেরা করেন এবং তাকে হত্যার সুযোগ খুঁজতে থাকে।
পরবর্তীতে ২৫ শে জুন রাত আনুমানিক পৌনে দশটায় জনৈক মিরাজের চায়ের দোকানে তাস খেলার কথা বলে তাকে মামলার ঘটনাস্থল পরমানন্দপুর গ্রামের শেষ সীমানায় একই তারিখ অনুমান রাত দশটায় আব্দুল হক মুন্সীর কলাবাগানে নিয়ে যায়। যাবার সময় একটা সিমেন্টের বাজারের ব্যাগ এর মধ্যে আম সহ তার পূর্বের পরিকল্পনাকৃত কৌশলে নিয়ে যায়। ঘটনাস্থলে পৌঁছে উক্ত শরিফ সেক এর পিছনে যাইয়া কৌশলে ব্যাগ থেকে দেয়া বের করে পিছন দিকে হত্যার উদ্দেশ্যে সজোরে মাথায় মারলে শরিফ সেক রক্তাক্ত জখম অবস্থায় মাটিতে পড়ে যায়।
তখন উক্ত আসামি শরীফ বকাউল তার মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য দা দিয়া আরো এলোপাতাড়ি ভাবে শরীরের বিভিন্ন স্থানে কুপিয়ে হত্যা করে উক্ত আসামি মৃত্যু নিশ্চিত করে রক্তমাখা দা পুনরায় ব্যাগের মধ্যে ভরে চলে আসে। এরপর আসামী বাড়িতে এসে গামছা নিয়ে তার বাড়ির উত্তর পশ্চিম পাশে কুমার নদীর পানিতে কচুরি ও কাদার মধ্যে নিচে দা ব্যাগ ও তার রক্তমাখা শার্ট ও গেঞ্জি লুকিয়ে রাখে এবং শরিফ শেখ এর মোবাইল পানির মধ্যে ছুড়ে ফেলে দেয় আসামির স্বীকারোক্তি মোতাবেক তার বাড়ি পশ্চিম পাশে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দা ব্যাগ এবং আসামির পরিহিত জিন্সের প্যান্ট উদ্ধার করা হয়। এ ব্যাপারে আরো কেউ জড়িত আছে কিনা তা জানার জন্য তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।
এ ব্যাপারে কোতোয়ালি থানায় মামলা করা হয়েছে।