সেলাই মেশিনটি তার আত্মকর্মসংস্থান তৈরীতে কতটা সহায়ক হবে এমন প্রশ্নের জবাবে আবেগ আপ্লুত হয়ে নিজের অভিব্যক্তি প্রকাশ করে নমিতা বলেন ‘আমি জন্ম থেকেই শারীরিক প্রতিবন্ধী,স্বাভাবিক ভাবে হাটতে পারিনা। ছোট ছোট ভাই বোন রেখে প্রায় সাত বছর আগে তার বাবা মারা যায়। মা রাস্তায় মাটি কাটার কাজ করে তার লেখা পড়ার খরচ ও সংশার চালায়। বড় ভাই মিষ্টির দোকানে কাজ করত সে বিয়ে করে আলাদা খায়। তিন বোনের বিয়ে হয়েছে। এক ভাই ঢাকায় সবেমাত্র রঙের কাজ সিখছে। বাড়িতে ছোট এক বোন ও পঞ্চম শ্রেনীতে পড়–য়া ছোট এক ভাই রয়েছে।
অভাবের সংশারে প্রায়ই আধাঁ পেট খেয়ে চলে তাদের জীবন। তার মা এখন আর আগের মতন কাজ করতে পারেনা প্রায়ই অসুস্থ থাকে। নিজের লেখা পড়ার খরচ ও মায়ের চিকিত্সা ব্যায়ে কিছুটা সহায়তা করার জন্য সেলাই মেশিন পাওয়ার আসায় কয়েক মাস আগে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয়ে তিন মাসের (সপ্তাহে ৫দিন) সেলাই প্রশিক্ষন নেন তিনি।প্রশিক্ষন শেষে সেলাই মেশিন পাবে সে প্রতিক্ষায় ছিল সে। মেশিন বিতরনের কয়েকদিন আগে উপজেলা মহিলা অধিদপ্তর থেকে জানানো হয় ভোটার আইডি কার্ড না থাকায় তাকে সেলাই মেশিন দেওয়া হচ্ছেনা। তখন সে কান্নায় ভেঙে পরে সেলাই মেশিনটি না হলে যে বন্ধ হবে তার লেখা পড়া, হবে না তার মায়ের চিকিৎসা। মেয়েটি সেলাই মেশিনটি না পওয়ার বিষয়টি স্থানীয় এক সংবাদকর্মীকে জানায়।
মেয়েটির অসাহায়ত্বের কথা স্থানীয় ঐ সংবাদ কর্মীর মাধ্যমে হাজী আব্দুর রহীম কল্যান ট্রাষ্টের প্রতিষ্ঠাতার নজরে আসলে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ হতে তাকে একটি সেলাই মেশিন ও নগদ অর্থ প্রদান করা হয়। সেলাই মেশিনটি পেয়ে সে খুব আনন্দিত এতে তার সংশারের অভাব অনেকটা দুর হবে বলে আশা করছেন এই কলেজ শিক্ষার্থী নমিতা রানী।
প্রতিবন্ধী এই শিক্ষার্থী সেলাই মেশিনটি না পাওয়ার কারন জানতে চাইলে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা শারমিন সুলতানা জানান ‘সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয় হতে হঠাৎ চিঠি এসেছে প্রশিক্ষনার্থীদের মধ্যে যাদের ভোটার আইডি কার্ড নাই তারা সেলাই মেশিন পাবেনা। মেয়েটিকে আমার দেওয়ার ইচ্ছা থাকলেও অফিস আদেশ মানতে হয়েছে।
নমিতাকে সহায়তা প্রদানের বিষয়ে হাজী আব্দুর রহীম কল্যান ট্রাষ্টের পরিচালক মোস্তফা কবীর বলেন ‘নমিতাকে সেলাই মেশিনটি দিতে পেরে নিজেদের গর্বীত মনে করছি। প্রয়োজনে সাধ্যমত আমাদের ট্রাষ্টের পক্ষ হতে তাকে আরো সহায়তা করা হবে বলে আস্বাস দেন তিনি।
জানা যায়, হাজী আব্দুর রহীম কল্যান ট্রাষ্টটি তাদের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে উপজেলার অনেক অসহায় ও দুস্থ মানুষের কল্যানে কাজ কর যাচ্ছে।